স্টাফ রিপোর্টারঃ মামলা হওয়ার পরও এখনো পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল এমপি মহোদয়কে প্রকাশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওবার্তায় মেরে ফেলার হুমকি দাতা সেই টোকাই আলাউদ্দিন সন্ত্রাসীকে। বিষয়টি নিয়ে চরম হতাশ দ্বীপ জেলা ভোলার আপামর জনসাধারণ। একজন সংসদ সদস্যের নিরাপত্তা নিয়েই যদি জনমনে প্রশ্ন দেখা দেয়, তাহলে সাধারন মানুষের অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? পাশাপাশি ওই সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারী, কিশোর গ্যাংয়ের গডফাদার পক্ষিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টোকাই আলাউদ্দিন সরদারের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই ইউনিয়নের নির্বাচিত সকল ইউপি সদস্যরা। রোববার (১১ জুন) সকালে বোরহানউদ্দিনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পক্ষিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার হুমায়ুন কবির। এ সময় তিনি সাংবাদিকদেরকে বলেন, ইতিমধ্যেই আপনারা জেনেছেন যে, ওই সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন সরদার ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য সকলের প্রিয় নেতা আমাদের অভিভাবক আলী আজম মুকুল এমপি মহোদয়কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তারই একটি ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

গত ২/০৬/২০২৩ ইং তারিখ দৌলতখান উপজেলার নুর মিয়ার হাটে ওই সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন সরদারের ছেলে কিশোর গ্যাংয়ের টিম লিডার রোহান সরদারের নেতৃত্বে চাঁদাবাজির চেষ্টা করে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও ত্রাস সৃষ্টি করে।
পরে ওই বাজার ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে রোহান সদরকে আটকে রেখে দৌলতখান থানায় খবর দিলে থানা পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় আলাউদ্দিন সরদার মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব আলী আজ মুকুলকে অনুরোধ করেন তার ছেলে রোহানকে ছাড়িয়ে দিতে। কিন্তু সম্মানিত সংসদ সদস্য অন্যায়কে প্রশ্রয় না দিয়ে আইনগত ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এতে আলাউদ্দিন সরদার ক্ষিপ্ত হয়ে উল্লিখিত ভিডিও বার্তায় জনাব আলী আজম মুকুল এমপি মহোদয়কে হত্যার হুমকি দেন।

শুধু আমরা কেন এই ধরণের ন্যক্কারজনক ঘটনাটি সকলের কাছেই মনে হয়েছে এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিনের জনগণের নয়নের মনি আমাদের সকলের প্রিয় মানুষ এমপি আলী আজম মুকুল মহোদয়কে হুমকির ঘটনায় আমরা মনে করছি সন্ত্রাসী চেয়ারম্যান কঠিন দৃষ্টতা দেখিয়েছেন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত সন্ত্রাসী চেয়ারম্যান আলাউদ্দিনকে গ্রেফতার না করায় দুই উপজেলার জনসাধারণের মধ্যে এখনো চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমারা আপনাদের মতো কলম সৈনিকদের মাধ্যমে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত সন্ত্রাসী আলাউদ্দিনকে গ্রেফতারের দাবী জানাচ্ছি।

দুই পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, আলাউদ্দিন সরদার শপথ নেওয়ার পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি ঘুষ স্বেচ্ছাচারিতা, সরকারি চাল আত্মসাৎ করে তার কর্মীদের মাঝে বিতরণ সহ সনদ প্রদানের বিধিমালা ভঙ্গ করে মনগড়া ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করে আসছেন। ইউনিয়ন পরিষদ ম্যানুয়াল ২০১৩ ও ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ অনুযায়ী পরিচালনা করার জন্য আলাউদ্দিন চেয়ারম্যানকে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও চেয়ারম্যান নিজের ইচ্ছামতোই পরিষদ পরিচালনা করে আসছেন। সকল নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে সমস্ত আইন -কানুনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে পরিষদকে তার পারিবারিক অফিস হিসেবেই ব্যবহার করে যাচ্ছেন। সরকারের বরাদ্দ অনুদান নিয়ম বহির্ভূত আত্মাসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতামুক ভাবেই নিজের আত্মীয়-স্বজকে বিলি বন্টন করেছেন। নির্বাচনী ইশতেহারে জন্ম নিবন্ধন, প্রত্যয়ন পত্র, ট্রেড লাইসেন্স ফ্রি দেওয়ার কথা থাকলেও ইউনিয়ন পরিষদের নিয়োগকৃত বৈধ উদ্যোক্তা বাদ দিয়ে তার একক নিয়োগকৃত লোক নিয়োগ করে জন্ম নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ, ট্রেড লাইসেন্স সহ বিভিন্ন প্রত্যয়ন পত্রের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান সরকারী বিধি-বিধান অনুসরণ না করেই অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছেন। এছাড়া গ্রাম আদালতের মামলা প্রতি ৭০০ টাকা আদায় করেন। যাহা পুরোপুরি আইন বহির্ভূত কাজ।যার দরুন ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়রানি হচ্ছেন। সালিশ বিচারে তার ছোট ভাই জাকির সরদারকে দিয়ে ঘুষ গ্রহণ করেছেন। এই অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা আমাদের ইউপি সদস্যগণকে বিভিন্নভাবে অপমান গালমন্দ অসদাচরণ ও গায়ে হাত দেয়াসহ নানা ভাবে অপদস্ত করেন। কোনো সদস্য বাড়াবাড়ি করলে তাকে হত্যার হুমকি প্রদান করেন।

তাই চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সরদারের সকল ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ড তার সকল অনিয়ম অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থার জন্য সাংবাদিকদের লেখনীর মাধ্যমে দেশ ও জাতির কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।

তাছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষ হবার পরে তার প্রতিপক্ষ নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের উপর আলাউদ্দিন সরদার কি পরিমাণ নির্যাতন চালিয়েছে তার কোন সীমা নেই। স্থানীয় এক সাংবাদিক মিজানুর রহমানের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছেন। তিনি তার ছেলে সহ আরো সন্ত্রাসীরা সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে দেশীয় অস্ত্র ও রড দিয়ে পিটিয়ে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। স্থানীয় জনতা ৯৯৯ লাইনে ফোন করলে মিজানকে পুলিশ উদ্ধার করে।

একইভাবে কুলছুম রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ আলমগীর স্যারকে প্রকাশ্যে বাজারে শতশত মানুষের মাঝে গায়ে হাত দেয় সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন সরদার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। পক্ষিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি নিয়োগকৃত কাজী তার কথা মতো বাল্য বিবাহ না দিলে জনসম্মুক্ষে কাজী সাহেবকে সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন সরদার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী ব্যাপক মারধর করেন। প্রতিনিয়ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী নৌকায় ভোট করায় আলাউদ্দিন সরদার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা বিভিন্নভাবে প্রতিনিয়ত অপমান ও মারধর করছেন ওই সকল নেতা কর্মীর উপর। আমরা আশংকা করছি আলাউদ্দিন সরদার যে কারো প্ররোচনায় আমাদের মাননীয় এমপি জনাব আলী আজম মুকুল সাহেবকে যে কোন সময় হত্যা করার চেষ্টা করতে পারে। তাই অনতিবিলম্বে জেলার পুলিশ প্রশাসন যেনো আলাউদ্দিন সরদারকে গ্রেফতার করে তাকে আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করেন। সংবাদ সম্মেলনে এমনটিই দাবি করছেন পরীক্ষা ইউনিয়নের জনসাধারণের পাশাপাশি ভোলা-২ আসনের আওয়ামীলীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ।