জেএম.মমিন, বোরহানউদ্দিনঃ ভোলার বোরহানউদ্দিনে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের বিভিন্ন প্রজাতির খেজুর চাষে দেখছেন সফলতার হাতছানি। উপজেলার দালালপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী মোঃ মোসলেহ উদ্দিনের খেজুরের বাগানটি এখন পুরো গ্রাম জুড়ে ব্যাপক সারা ফেলেছে। প্রতিদিন এ বাগানটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অসংখ্য উৎসাহী জনতা। তার এই সফলতা দেখে গ্রামের বহু বেকার যুবক এ ধরনের খেজুর বাগান করার স্বপ্ন দেখছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিনের গড়ে তোলা মেসার্স হাজী এগ্রোফার্ম নামে খেজুর বাগানে ৪০ শতাংশ জমিতে বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেন খেজুরের চাষ। ২০২০ সাল থেকে শুরু করা তার খেজুরের বাগানটিতে গেলো বছর থেকেই কিছু কিছু গাছে খেজুর ধরতে শুরু করেছে। যার মধ্যে রয়েছে আজোয়া, সুক্কারি, মরিয়ম, খালাছ, আম্বার সহ বিভিন্ন প্রজাতির খেজুর।
খেজুরের মতো এমন একটি বিশেষ ফলের বাগান করার প্রতি উদ্যোগ গ্রহণ করার বিষয়ে জানতে মোসলেহ উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ১৮ বছর যাবত তিনি প্রবাস জীবন যাপন করছেন। প্রায় ৪ বছর আগে দেশে আসার সময় সৌাদ আরব থেকে বিভিন্ন প্রজাতির খেজুরের বীজ নিয়ে আসেন তিনি। যদিও তা শখের বসেই বাড়ির আঙ্গিনায় রোপন করেন। এরপর বীজ থেকে চারা গজিয়ে গাছ বড় হতে শুরু করলে তার মধ্যে খেজুরের বাগান করার প্রতি অনেকটা আগ্রহ চলে আসে। পরক্ষণেই তিনি ৪০ শতাংশ জমি ক্রয় করে সেখানে খেজুরের চাষ করার পাশাপাশি কিছু উন্নত জাতের ড্রাগনের কাটিংও রোপন করেন।
গেলো বছর অর্থাৎ ২০২২ সাল থেকে সেই বাগানের কিছু কিছু গাছে খেজুর আসা শুরু করে। যদিও প্রথমে বিষয়টি নিয়ে এলাকার মানুষজন অনেকটা হাসি ঠাট্টা করলেও দুই বছরের মাথায় গাছে ফলন আসার পর অনেকের মধ্যেই তা নিয়ে অনেকটা বিস্মিতই হয়েছেন। এমনকি বহু দূর দূরান্ত থেকে দেখতে আসছেন উৎসাহী বহু জনতা। কেউ আবার নিজেরাই এভাবে খেজুর বাগান করার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
এরইমধ্যে মোসলেহ উদ্দিন তার বাড়ির আঙ্গিনায় মাটির পাত্রে বীজ থেকে উৎপন্ন করা চারা বিক্রিও শুরু করেছেন। বর্তমানে তার বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২৫০টি খেজুর গাছ ও ৮০০ ড্রাগন গাছ রয়েছে। এছাড়া বিক্রির উদ্দেশ্যে বর্তমানে বাড়ির আঙ্গিনায় মাটির পাত্রে রয়েছে আরো ২৩০টি খেজুরের চারা।
জানা গেছে, গত বছর সুক্কারি জাতের দুটি গাছে ৮ কেজি খেজুর ধরেছে। এবছর আরো ৩টি গাছে খেজুর এসেছে। এর মধ্যে বৃষ্টির কারনে ২টি গাছের খেজুর ঝড়ে গেছে। বাকি একটি থেকে ১২-১৪ কেজি খেজুর পাওয়া যাবে বলে ধারনা করছেন তিনি।
এভাবেই যদি খেজুরের আবাদ আরো বাড়ানো যায়, তাহলে কোন এক সময় দেখা যাবে তার বাগানের উৎপাদিত খেজুর ভোলার বাজারসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করতে পারবেন বলে তিনি মনে করছেন।
এ ব্যাপারে কাচিয়া ব্লকের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল বিন হাবিব জানান, এটা একটা ভালো উদ্যোগ। আমাদের দেশে বানিজ্যিকভাবে আরব দেশের খেজুর চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। ইতিমধ্যে আমরা কয়েকবার বাগানটি পরিদর্শন করেছি। তাকে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগীতা দিচ্ছি। আমরা আশা করছি আগামী দিনগুলোতে এর ফলন আরো ব্যাপক আকারে বিস্তার লাভ করবে।
You cannot copy content of this page